১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ -২৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ- ২১শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ফের যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন, ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আটকে দিলেন নেতানিয়াহু

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে আরও ছয় জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ভূখণ্ডটির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। কিন্তু, এর বিনিময়ে যে ৬২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, তা অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দাবি, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরায়েলের হাতে তুলে দিয়েছে হামাস। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে না।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, শনিবার রাতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন একটি বিবৃতি দেন, যেখানে তিনি বলেন, অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইসরায়েলি জিম্মিদের অসম্মান করা হয়েছে। এ ছাড়া অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করার জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ধাপে জিম্মিদের সুষ্ঠুভাবে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার যেসব ফিলিস্তিনি মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাদের ছাড়া হবে না।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলছে, দিন পেরিয়ে রাত হয়ে গেলেও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়নি ইসরাইল। অপেক্ষারত ফিলিস্তিনি পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের ফিরে পেতে অপেক্ষার প্রহর গুনছে।

এদিকে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চুক্তি বাস্তবায়নে গড়িমসি এবং যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার কৌশলের অভিযোগ তুলেছে হামাস। হামাসের এক মুখপাত্র বলেছেন, নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও ইসরায়েল সপ্তম দফায় বন্দিদের মুক্তি না দিয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চরম লঙ্ঘন করেছে।

দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস হামাস নিধনের নামে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী আগ্রাসন চালানোর পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এরপর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস। তবে, ওই দিন শিরি বিবাস নামে একজনের মরদেহের পরিবর্তে আরেকজনের দেহ হস্তান্তর করা হয়েছিল। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরায়েল। অবশ্য পরদিনই শিরি বিবাসের মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস।

চলমান যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ ৪২ দিনের। এই সময়ে মোট ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। তারপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ শুরুর কথা রয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতিতে যেতে আগ্রহী নন নেতানিয়াহু।

অন্যদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে নতুন করে ইসরায়েলি সহিংসতা বাড়ছে। ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেইর দিবওয়ানে হামলা চালিয়ে শত শত গবাদিপশু লুট করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। একইসঙ্গে, কুসরা শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে টিয়ারগ্যাস ছোড়ার কারণে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন অসংখ্য মানুষ।

শেয়ার করুন :