৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ -২৫শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ- ১২ই জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

নিরাপত্তা খুঁজতে গিয়েই বিপদে পড়েছেন মিরাজরা

এমন নয় যে সত্যিকারের ব্যাটিং উইকেটে দলকে নিশ্চিন্ত করার মতো স্কোর গড়ার নজির নেই বাংলাদেশের ব্যাটারদের। সেটি এই পাকিস্তানের মাটিতেই আছে। দেড় বছর আগে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের আফগানিস্তান ম্যাচেই যেমন। ওপেনিংয়ে নেমে সেঞ্চুরি করেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

সেই সঙ্গে নাজমুল হোসেনের তিন অঙ্ক ছোঁয়া ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রানের নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচেও রাওয়ালপিন্ডির দারুণ ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলের জন্য একই রকম নিরাপত্তাই নাকি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন ব্যাটাররা। মেহেদী হাসান মিরাজের দাবি অন্তত সে রকমই। তবে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর মিছিলও চলছিল বাংলাদেশের।

যে কারণে নতুন ব্যাটারের পক্ষে ‘স্ট্রাইক রোটেট’ করতে না পারার অসহায়ত্বও যোগ হয়েছিল।
কিউইদের কাছে হারের পর সোমবার রাতের সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত সে কথা বলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর মিক্সড জোনে এলেন মিরাজ। যেখানে তিনি অতিরিক্ত ডট বল খেলার কারণে ক্রমবর্ধমান চাপ থেকে অন্যভাবেও বেরিয়ে আসা সম্ভব ছিল বলে স্বীকার করেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে আবার নিরাপদ সংগ্রহের নিরাপত্তাও খুঁজতে চেয়েছেন তাঁরা।

সে জন্য তাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নিয়েই বিপদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, ‘আমরা সিঙ্গেল নিয়ে নিয়ে খেলতে পারতাম। তবে মাঝের ওভারগুলোতে আমরা একটু বেশি আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেছি। কারণ উইকেটটি এত ভালো ছিল যে আমাদের মনে হয়েছিল এই উইকেটে ২৫০ রান করেও হয়তো নিরাপদ থাকতে পারবো না। তাই আমরা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার কথাই ভেবেছি। যাতে ৩০০ রান করে ম্যাচটি জিততে পারি।

’ যদিও তাঁদের থামতে হয় এর থেকে অনেক পেছনে।
ভাবনা থাকলেও আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের নমুনা উপস্থাপন করতে পারেননি ব্যাটাররা। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম (২৪ বলে ২৪) ছাড়া কেবল রিশাদ হোসেনের (২৫ বলে ২৬) স্ট্রাইক রেটই তিন অঙ্ক পেরিয়েছিল। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯২.৮৫ স্ট্রাইক রেট ছক্কা মেরে রানের খাতা খোলা মিরাজের (১৪ বলে ১৩)। ২৭ মাস ও ৩৪ ম্যাচ পর ওপেনিংয়ে ফিরে ফিফটি করা অধিনায়ক নাজমুল ৭০ স্ট্রাইক রেটে ১১০ বলে খেলেছেন ৭৭ রানের ইনিংস। স্ট্রাইক রেট বাড়াতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসায় পরের ব্যাটারকেও পড়তে হয়েছে মহা ঝামেলায়, ‘এখানে উইকেটটি এমন ছিল যে কেউ সেট হয়ে গেলে তাঁর জন্য খেলাটা সহজ। কারণ একজন নতুন ব্যাটারের জন্য প্রথম ১০-১৫টি বল খেলা একটু কঠিন হয়। আমাদের ক্ষেত্রে ওই জায়গাটায় ডট বলের পরিমাণ বেশি হয়ে গেছে। উইকেট কম পড়লে হয়তো আমরা ভালো করতাম।’

মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার মাইকেল ব্রেসওয়েলের অফস্পিনেও ভুগেছে বাংলাদেশ। এর আগে ২৭ ম্যাচে ২৭ উইকেট পাওয়া বোলার রাওয়ালপিন্ডিতে করেছেন তাঁর ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হওয়া এই বোলারের সাফল্যের বিপরীতে নিজেকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন মিরাজ, ‘আসলে উইকেট পড়ে যাওয়ার কারণেই এ রকম হয়েছে (আমরা সমস্যায় পড়েছি)। আমি যদি আউট না হতাম এবং আমার পরে যদি হৃদয় আউট না হতো, তাহলে কিন্তু খেলাটি ভিন্নরকম হতো। আমি কিন্তু স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলছিলাম। ছক্কাও মেরেছিলাম। আমার জন্য খেলাটি সহজ হয়ে যাচ্ছিল। আমি আউট না হলেই পরের ব্যাটারদের কাজ সহজ হয়ে যেত।’

শেয়ার করুন :